একটি আম গাছের কাণ্ড, একটি লাউগাছের কাণ্ড এবং একটি নারকেল গাছের কাণ্ড লক্ষ করি। কোনোটির কাণ্ড বেশ শক্ত, কোনোটি দুর্বল আবার কোনোটির মধ্যে কোনো শাখা-প্রশাখা নেই। এ থেকে ধারণা করা যায় যে কাণ্ড বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। তবে এদের প্রাথমিকভাবে দুইভাগে ভাগ করা যায়, যথা-১) সবল কাণ্ড ও ২) দুর্বল কাণ্ড।

১) সবল কাণ্ড: এসব কাণ্ড শক্ত ও খাড়াভাবে গাছকে দাঁড়াতে সাহায্য করে। যেমন: আম, জাম, নারিকেল, তাল ইত্যাদি গাছের কাণ্ড। এই কাণ্ডগুলোর কোনোটির শাখা-প্রশাখা থাকে আবার কোনোটির শাখা-প্রশাখা থাকে না।
ক) অশাখ কাণ্ড: এসব কাণ্ডের কোনো শাখা হয় না। কাণ্ডটি লম্বা হয়ে বেড়ে ওঠে। এর শীর্ষে পাতার মুকুট থাকে। খেয়াল করলে দেখবে নারিকেল, তাল, সুপারি ইত্যাদি গাছের কাণ্ড এ ধরনের হয়।
খ) শাখান্বিত কাণ্ড:
১. মঠ আকৃতি: কোনো কোনো গাছে প্রধান কাণ্ডটি থেকে এমনভাবে শাখা-প্রশাখা সৃষ্টি হয় যে পূর্ণাঙ্গ গাছটিকে একটি মঠের ন্যায় দেখায়। এ গাছের নিচের দিকের শাখাগুলো বড়ো এবং ক্রমান্বয়ে উপরের দিকের শাখাগুলো ছোটো হয়ে থাকে।
সম্পূর্ণ গাছটি নিচে থেকে উপরের দিকে ক্রমশ সরু হয়ে মঠের ন্যায় আকার ধারণ করে। দেবদারু, বিলেতি ঝাউ ইত্যাদি গাছে এ ধরনের কাণ্ড দেখা যায়।
২. গম্বুজ আকৃতি: কোনো কোনো গাছের প্রধান কাণ্ডটি খাটো ও মোটা হয় এবং শাখা ও প্রশাখাগুলো এমনভাবে এই প্রধান কাণ্ডে বিন্যস্ত হয় যে গাছটিকে একটি গম্বুজের ন্যায় দেখায়, যেমন- আম, কাঁঠাল, জাম ইত্যাদি।
৩. তৃণ কাণ্ড: এসব কাণ্ডে পর্ব ও পর্বমধ্য খুবই স্পষ্ট। পর্ব থেকে অস্থানিক মূল সৃষ্টি হতে দেখা যায়, যথা- বাঁশ, আখ ইত্যাদি। ক্ষেত্রবিশেষে এসব কাণ্ডের পর্বগুলো ফাঁপা বা ভরাট হতে পারে।
২) দুর্বল কাণ্ড: কিছু উদ্ভিদের কাণ্ড খাড়াভাবে দাঁড়াতে পারে না তাই মাটিতে বা মাচার উপরে বৃদ্ধি পায়। এদের কাণ্ডে সাধারণত কাষ্ঠ থাকে না তাই এরা দুর্বল ও নরম। এদের কোনোটি লতানো, কোনোটি শয়ান আবার কোনোটি আরোহিণী।

ক) ক্রিপার বা লতানো: এসব কাণ্ড মাটির উপর দিয়ে সমান্তরালভাবে বৃদ্ধি পায়। এদের প্রতিটি পর্ব থেকে গুচ্ছমূল বের হয়ে মাটিকে আঁকড়ে ধরে, যেমন- ঘাস, আমরুল ইত্যাদি।
খ) ট্রেইলার বা শয়ান: এসব কাণ্ড মাটির উপরে ছড়িয়ে পড়ে কিন্তু পর্ব থেকে মূল বের হয় না। যথা- পুঁই, মটরশুঁটি ইত্যাদি।
গ) আরোহিণী: এ সকল কাণ্ড কোনো অবলম্বনকে আঁকড়ে ধরে উপরের দিকে বেড়ে ওঠে, এরা ক্লাইম্বার বা আরোহিণী। যথা- শিম, পান, বেত ইত্যাদি।

| কাজ: তোমরা দল বেঁধে বিদ্যালয়ের কাছাকাছি এলাকা থেকে ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন গাছের কাণ্ড পর্যবেক্ষণ কর এবং কোন গাছের কাণ্ড কী ধরনের তা খাতায় নোট কর। শ্রেণিতে ফিরে কাণ্ডের শ্রেণিকরণ কর। |
Read more